এপিএন ডেস্ক :
ডোমার উপজেলার জোড়াবাড়ি, মাঝাপাড়ার প্রান্তীক মাছ চাষী মোঃ রাকিবুল ইসলাম মাস্টার । তিনি সনাতনী পদ্ধতীতে মাছ চাষ করতেন এতে লাভের পরিমান কম হতো তাছাড়া পুকরে গ্যাসের কারনে মাছের উৎপাদন কম হতো । পুকুরের অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখতে তার প্রতি মাসে ৭০০০-১০০০০ টাকার অক্সিজেন ট্যাবলেট কিনতে হত। মাছ চাষে বাড়তি খরচ করতে গিয়ে লাভজনক এই ব্যাবসা থেকে অনেকটা নিরাস হন চাষী রফিকুল । এক বন্ধুর মারফত এ্যারেটর ব্যবহার করে অধিক মাছের উৎপাদন সর্ম্পকে জেনে আগ্রহী হণ তিনি শরণাপন্ন হন (শার্প)কৃষি ইউনিটের ।
চাষী রাকিবুল ইসলাম মাস্টার জানান, তিনি শার্প সংস্থা হতে মাছ চাষের জন্য ২ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে এ্যারেটর স্থাপনের মাধ্যমে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষ শুরু করেন। পূর্বে তার প্রতি মাসে ৭০০০-১০০০০ টাকার অক্সিজেন ট্যাবলেট কিনতে হত যা এখন আর দরকার হয় না। বর্তমানে ১৭০ শতাংশ এ্যারেটরযুক্ত পুকুরে শার্প সংস্থার মৎস্য কর্মকর্তা রবিউল ভাইয়ের পরামর্শে মনোসেক্স তেলাপিয়া, কার্প জাতীয় মাছ এবং দেশী মাগুর মাছের মিশ্র চাষ করছেন। তার পুকুরে প্রায় ৭-৮ টন মাছ রয়েছে যার বাজারমূল্য প্রায় ১২-১৪ লক্ষ টাকা যেখানে এপর্যন্ত মোট ব্যয় প্রায় ৪.৫-৫ লক্ষ টাকা। তিনি আশা করছেন ১.৫-২ মাসা পরে মাছ বিক্রি হবে প্রায় ১০-১২ টন যার বাজারমূল্য কমপক্ষে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা যেখানে শতাংশ প্রতি উৎপাদন টার্গেট ৬০-৭০ কেজি।
তিনি আরও জানান,শিক্ষকতার পাশাপাশি ২ জন স্থায়ী লোকবল নিয়োগের মাধ্যমে মাছ চাষ করে আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হচ্ছি। সেই সাথে মাছ চাষের সাথে জড়িত স্থায়ী এবং অস্থায়ী লোকবলের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তার এ্যারেটর স্থাপন করে মাছ চাষ দেখে একই উপজেলার আমবাড়িতে ১ জন এবং দেবীগঞ্জ সদর উপাজেলায় ১ জন এরেটর স্থাপন করেছেন। তিনি কারিগরি এবং আর্থিক সহযোগিতার জন্য শার্প সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।
মোঃ রমজান আলী জানান , আমি রফিকুল মাষ্টারের পুকুরে কাজ করি বর্তমানে রাকিবুল মাস্টার ৪ টি পুকুরে মাছ চাষ করছেন। এক পুকুরেই মাছের এত উৎপাদন এর আগে দেখিনি।
জানা যায় , ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর হতে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগীতায় সেলফ-হেলপ এন্ড রিহেবিলিটেশন প্রোগ্রাম (শার্প) সংস্থা কৃষি ইউনিট (মৎস্য খাতের) আওতায় মাছ চাষের বিভিন্ন প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় “অ্যাকুয়াকালচার ম্যাকানাইজেশন” প্রদর্শনীর মাধ্যমে শার্প-মির্জাগঞ্জ শাঁখার অধীনে রাকিবুল ইসলাম মাস্টার তার পুকুরে প্যাডেল হুইল এ্যারেটর স্থাপনের মাধ্যমে অধিক ঘনত্বে মাছ চাষ শুরু করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শার্প এনজিও এর মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ রবিউল আলম জানান “অ্যাকুয়াকালচার মেকানাইজেশন” হচ্ছে যুগউপযোগী প্রযুক্তি। যেহেতু জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে চাষযোগ্য জমি/পুকুর বৃদ্ধির যেহেতু সুযোগ নেই। সেখানে মানস¤পন্ন এবং নিরাপদ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর মাছ চাষের কোন বিকল্প নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *